যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বাতিল হওয়া রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি অবশেষে পুনর্বহাল করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অর্থ দফতর বুধবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ছুটি বাতিলের আগের নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর ফলে রাজ্যের সরকারি দফতরগুলিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছে।
ছুটি বাতিলের প্রেক্ষাপট
গত ৭ মে, ভারত-পাক সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কায় রাজ্য সরকার এক নির্দেশিকা জারি করে সমস্ত সরকারি কর্মচারীর ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছিল। শুধু তাই নয়, ‘স্টেশন লিভ’-এর বৈধতাও তুলে নেওয়া হয়েছিল। ‘অত্যন্ত জরুরি’ প্রয়োজন ছাড়া কোনও সরকারি কর্মীর ছুটি মঞ্জুর করা হচ্ছিল না। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল, আপদকালীন পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রশাসনিক পরিকাঠামোগুলিকে সর্বদা প্রস্তুত রাখা, যাতে যেকোনো জরুরি অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। ভারত-পাক সীমান্তে এখন তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে এবং যুদ্ধবিরতিও কার্যকর হয়েছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক স্তরেও স্বাভাবিকতা ফিরতে শুরু করেছে। এই আবহেই সরকারি কর্মীদের স্বস্তি দিতে পুরনো নির্দেশিকা বাতিল করে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করল অর্থ দফতর।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উচ্চপর্যায়ের আলোচনার পরই এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক দায়িত্ব এবং দৈনন্দিন জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্ব বিবেচনা করেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিয়মিত ছুটি ফিরছে
নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এখন থেকে আগের নিয়মেই নিয়মিত ছুটি, স্টেশন লিভ, মেডিক্যাল বা পারিবারিক প্রয়োজনে ছুটির আবেদন ও অনুমোদন সবই স্বাভাবিক ছন্দে চলবে। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ সরকারি দফতরে এই নতুন নির্দেশিকা পৌঁছে গেছে।
নতুন ছুটি নীতির খবর ছড়িয়ে পড়তেই সরকারি কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক স্বস্তি ফিরে এসেছে। একাধিক কর্মচারী মন্তব্য করেছেন, “শেষ কয়েকটা সপ্তাহ দারুণ চাপের ছিল। পরিবারের কারো অসুস্থতা হোক কিংবা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে—ছুটি না-পাওয়ায় অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। এখন অন্তত নিঃশ্বাস ফেলতে পারছি।”
সরকারি স্তরে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির প্রেক্ষিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত যে সময়োপযোগী ছিল, তা স্বীকার করে নিয়েই এই ‘সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হয়েছে। এখন ‘নবান্ন’ থেকে শুরু করে রাজ্য প্রশাসন আবার ছুটির ছন্দে ফিরছে।