মাপটল ভাজা হোক কিংবা পটলের তরকারি অথবা দই পটল—এই পদগুলো খেতে তো দারুণ লাগে! তবে শুধু স্বাদের জন্যই নয়, পটল খাওয়া শরীরের পক্ষে কতটা ভালো, তা কি জানেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে ভরপুর পটল অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর একটি সবজি। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা থেকে শুরু করে ওজন কমানো পর্যন্ত, পটলের রয়েছে হরেক রকমের গুণ। চলুন, পটলের কিছু উল্লেখযোগ্য গুণাগুণ জেনে নেওয়া যাক:
১. কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় উপকারী: পটলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা খাদ্য তন্তু থাকে। এই ফাইবার আমাদের পাচনতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং মল নির্গমনে সহায়তা করে। ফলে, পটল খেলে একদিকে যেমন অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, তেমনই অন্যদিকে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করতে পারে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে: পটলে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, ভিটামিন সি জারণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট বিভিন্ন ক্ষতিকর ‘ফ্রি র্যাডিকেলের’ ক্রিয়া থেকে দেহকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে। ঋতু পরিবর্তনের সময় হওয়া সর্দি-জ্বর প্রতিরোধ করতেও পটল কাজে আসতে পারে। এমনকি লিভারের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্যও পটল বেশ উপকারী বলে মনে করা হয়।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: পটলে যে ফাইবার পাওয়া যায়, তা হজম হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এর ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং जल्दी খিদে পায় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একশ’ গ্রাম পটলে ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ২০। তাই, যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের খাদ্য তালিকায় পটল যোগ করলে তা বেশ কার্যকরী হতে পারে।
৪. কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে: পটল রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল (LDL) কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল (HDL) বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এর ফলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে।
৫. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: পটল ও পটলের বীজ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী হতে পারে। পটলে ‘ফ্ল্যাভিনয়েড’ জাতীয় উপাদান থাকে। এছাড়াও এতে কপার, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ উপাদানও বিদ্যমান। এই উপাদানগুলি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
তবে মনে রাখবেন, সব খাবার সকলের শরীরে সমানভাবে সহ্য হয় না। তাই কোনো খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। পটল নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর সবজি এবং আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এটি যোগ করা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে।