সাবধান! পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করছেন? ডেকে আনছেন মারাত্মক রোগ

পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, পাকোড়া, কাবাব কিংবা জিলেপির মতো মুখরোচক ভাজাভুজি তৈরি করতে প্রচুর তেলের প্রয়োজন হয়। অনেক বাড়িতেই বেঁচে যাওয়া তেলের অপচয় রোধ করতে তা পরের দিন ফের ব্যবহার করা হয়। তবে এই অভ্যাস শরীরের জন্য ডেকে আনতে পারে মারাত্মক বিপদ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পোড়া তেল একাধিকবার ব্যবহার করলে দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।

পোড়া তেল পুনরায় ব্যবহার করে তৈরি খাবার খেলে শরীরে ফ্রি র্যাডিকেলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই ফ্রি র্যাডিকেল শরীরের বিভিন্ন প্রদাহের জন্য দায়ী। এটি শরীরের সুস্থ কোষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নানা স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করে। এমনকি, ফ্রি র্যাডিকেল কখনও কখনও কার্সিনোজেনিক অর্থাৎ ক্যান্সার সৃষ্টিকারীও হতে পারে।

শুধু তাই নয়, পোড়া তেল ব্যবহারের ফলে এথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকিও বাড়ে। এর ফলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ধমনীতে বাধা সৃষ্টি হয়। বারবার পোড়া তেল ব্যবহারের কারণে অ্যাসিডিটি, হৃদরোগ, আলঝেইমার্স, পারকিনসনস এবং গলা ও বুক জ্বালার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কতবার তেল ব্যবহার করা উচিত?

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডুবো তেলে একবার খাবার ভাজার পর সেই তেল আর পুনরায় ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে, ব্যবহৃত তেলের প্রকারভেদের উপর নির্ভর করে তা কতবার ব্যবহার করা যাবে। কিছু নিয়ম মেনে চললে অবশ্য ব্যবহৃত তেল পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে। জেনে নিন সেই উপায়গুলি:

অবশিষ্ট তেল ছেঁকে সংরক্ষণ করুন: ভাজার পর তেল ঠান্ডা হলে তা ভালোভাবে ছেঁকে একটি এয়ারটাইট পাত্রে ঢেলে রাখুন। এর ফলে তেলের মধ্যে থাকা খাবারের কণাগুলি দূর হয়ে যায়, যা খুব দ্রুত তেল নষ্ট করে ফেলতে পারে।

পুনরায় ব্যবহারের আগে পরীক্ষা করুন: যখনই তেল পুনরায় ব্যবহার করবেন, তার রং এবং ঘনত্ব ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। যদি তেল গাঢ় বা কালচে রঙের এবং ঘন হয়ে যায়, তবে তা ফেলে দেওয়াই উচিত।

ধোঁয়া উঠলে ফেলে দিন: তেল গরম করার সময় যদি খুব দ্রুত ধোঁয়া উঠতে শুরু করে, তাহলে সেই তেল আর ব্যবহার করা উচিত নয়। এই তেলে এইচএনই (HNE) নামক একটি বিষাক্ত পদার্থ জমা হতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।

মনে রাখা জরুরি:

বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য তেলের পুষ্টিগুণ এবং উপাদান ভিন্ন ভিন্ন হয়। কিছু তেল দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজার জন্য উপযুক্ত, কারণ এই তেল সহজে ভেঙে যায় না। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সূর্যমুখী তেল, সয়াবিন তেল, চালের তুষের তেল (রাইস ব্রান অয়েল), চিনাবাদামের তেল, তিলের তেল, সরিষার তেল এবং ক্যানোলা তেল।

অন্যদিকে, অলিভ অয়েলের মতো তেল ভাজাপোড়ার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। এই তেল একবার ব্যবহার করাই শ্রেয়। উচ্চ তাপমাত্রায় এই তেলের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

তাই, নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। টাটকা তেলে ভাজা খাবার খান এবং সুস্থ থাকুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy