কফি উপভোগ করতে হলে সাধারণত আমরা দুধ চিনি দিয়ে জমিয়ে খাই। পোশাকি ভাষায় কাপুচিনো বা ল্যাটে ফর্মে। স্বাস্থ্য সচেতনরা চিনি ছাড়া কালো কফি খেতেই পছন্দ করেন। অনেকে আবার ওয়ার্কআউটের আগে ব্ল্যাক কফি শট দিয়ে ফিটনেস রুটিন শুরু করেন। আর এখন ফিটনেস ড্রিঙ্ক হিসেবে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গ্রিন কফি। কাঁচা গ্রিন কফির পাশাপাশি গ্রিন কফি পাউডার, গ্রিন কফি মিক্সচারও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। সত্যিই কি গ্রিন কফি ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে?
কফি বিনসের প্রাকৃতিক রং হলো সবুজ। বাণিজ্যিক কারণে কফি বিনসকে রোস্ট করে খয়েরি বা বাদামি রং দেওয়া হয়। কফির মধ্যে দুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ফার্মালজিক্যালি সক্রিয় যৌগ থাকে। তা হলো ক্যাফেইন ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড। মানুষের শরীরের মেটাবলিজমের উপর ক্যাফেইনের অনেক প্রভাব থাকলেও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বেশি শক্তিশালী। কফি বিনস যখন রোস্ট করা হয় তখন অধিকাংশ ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডই উবে যায়। তাই গ্রিন কফি বিনসে ব্রাউন কফি বিনসের তুলনায় বেশি পরিমাণে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাফেইন মেটাবলিজম রেট ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের সাহায্যে ক্যাফেইন পৌষ্টিক নালীতে কার্বোহাইড্রেট শোষণ কমাতে পারে। রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়িয়ে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। ওজন কমাতে গ্রিন কফি উপকারী না ব্রাউন কফি এই সংক্রান্ত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ১২ সপ্তাহ ধরে উপযুক্ত ডায়েট ও এক্সারসাইজের পাশাপাশি ব্রাউন কফি খেলে যে পরিমাণ ফ্যাট লস সম্ভব, ডায়েট ও এক্সারসাইজের পাশাপাশি গ্রিন কফি তার চেয়ে বেশি ফ্যাট ঝরাতে কার্যকর। যদিও, দুটিরই পুষ্টিগুণ সমান।
বিভিন্ন প্রকার ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল ফর্মে গ্রিন কফি পাওয়া যায়। অনেক প্রি-ওয়ার্কআউট ফ্যাট বার্নার হিসেবে গ্রিন কফি ক্যাপসুল খেয়ে থাকেন। কিন্তু ন্যাচারাল গ্রিন কফিই সবচেয়ে উপকারী। তাই গ্রিন কফি বিনস কিনে ফুটিয়ে নিয়ে সাধারণ কফির মতো খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। যেহেতু গ্রিন কফি স্টিমিউল্যান্ট তাই সকলের সহ্য নাও হতে পারে। অতিরিক্ত গ্রিন কফি খেলে নেশা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা থেকে মাথা যন্ত্রণা বা বুক ঢিবঢিব করার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
আমাদের পরিপাক ক্রিয়ায় উপর গ্রিন টি এক্সট্র্যাক্টের কিছু প্রভাব থাকলেও তা একেবারেই নগন্য। মেদ ঝরানোর জন্য সঠিক ডায়েট প্ল্যান ও ওয়ার্ক আউট রুটিন ছাড়া কোনো দ্বিতীয় পথ নেই। গ্রিন কফি কোনো ম্যাজিক পিল নয়। তাই মেদ ঝরিয়ে দীর্ঘকালীন ফল পেতে হলে অবশ্যই ডায়েট ও এক্সারসাইজেই ভরসা রাখতে হবে। যখন নিয়মিত ডায়েট ও ট্রেনিংয়ের রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন তখন স্টিমিউল্যান্ট হিসেবে গ্রিন কফি খেলে উপকার পেতে পারেন।