আপনার ত্বক ও চুলের যত্নে অ্যাসিড ব্যবহার করবেন যেভাবে, জেনেনিন ব্যবহার পদ্ধতি

অ্যাসিড দিয়ে রূপচর্চা নতুন না হলেও অনেকের কাছেই নতুন। ত্বক ও চুলের যত্নে কীভাবে ও কোন অ্যাসিড ব্যবহার করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত লিখলেন ফারাহ বিলকিস

ত্বক ও চুল চর্চায় নতুন নতুন সব উপাদান যুক্ত হচ্ছে। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে অ্যাসিড। নির্দিষ্ট কিছু অ্যাসিড ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বলিরেখা দূর এবং  একনেসহ নানা সমস্যা দূর করে। মাথার স্ক্যাল্পও সুস্থ রাখে। বিশে^র নামকরা প্রসাধন কোম্পানি প্রসাধন তৈরিতে এসব অ্যাসিড ব্যবহার করেন। ত্বক বিশেষজ্ঞরা এসব প্রসাধন দিয়ে রূপচর্চার পরামর্শ দেন। তবে অ্যাসিড ত্বক ও চুলে ব্যবহারের আগে সঠিক পরিমাণ এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে জেনে নিলে সুফল পাওয়া যাবে। ত্বক চর্চার আলোচিত অ্যাসিডগুলোর মধ্যে রয়েছে রেটিনল, হাইলিউরোনিক অ্যাসিড, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড অ্যাসিড, ল্যাকটিক অ্যাসিড, অ্যাজেলাইক অ্যাসিড ইত্যাদি। ত্বকের ধরন অনুযায়ী অ্যাসিড বাছাই করতে হবে।

ত্বকের জন্য

রেটিনল : এটি মূলত ভিটামিন এ থেকে তৈরি। ত্বকের বলিরেখা দূর, টেক্সচার ঠিক, দাগ কমাতে এবং ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তবে এটি রেটিনয়েড, ভিটামিন সি, ডিরেক্ট অ্যাসিড, কপার পেপটাইডসের সঙ্গে এক রুটিনে কিংবা লেয়ার করে ব্যবহার করা যায় না, বদলে ব্যবহার করতে হয়। এই অ্যাসিডযুক্ত প্রসাধন রাতে ব্যবহার করতে হয়।

নায়াসিনামাইড : এটি ভিটামিন বি-৩ হিসেবেও পরিচিত। এই অ্যাসিড ত্বকে সেবাম উৎপন্ন হওয়া কমায়, তেমনি ব্রণজনিত সমস্যা কম হয়। ত্বকের মলিনতা দূর করে, টেক্সচার ভালো করে এবং বয়সের ছাপ কমায়। সকালে ও রাতে দুবেলা ব্যবহার করা যায়।

হায়ালিউরনিক অ্যাসিড : ময়েশ্চারাইজার জাতীয় প্রসাধনে হায়ালিউরনিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। সেরামেও এই অ্যাসিড রয়েছে। মূলত ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখাই এই অ্যাসিডের কাজ। যেকোনো সময়, যেকোনো উপাদানের সঙ্গেই ব্যবহার করা যায় এই অ্যাসিড।

স্যালিসাইলিক অ্যাসিড : যাদের ত্বকে একনে বেশি হয়, যারা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য উপযুক্ত হিরো ইনগ্রিডিয়েন্ট স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। এটি একমাত্র বেটা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড (বিএইচএ), যা ত্বকের সেবাম প্রোডাকশন কমাতে সাহায্য করে । লোমকূপ পরিষ্কার রাখে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি ত্বকের স্তরকেও উন্নত করে।

ল্যাকটিক অ্যাসিড : হাইপার পিগমেন্টেশন কমায়, ব্রণের দাগছোপ দূর, মলিন ত্বককে রিপেয়ার বা পুনর্গঠিত করে এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। সরাসরি অ্যাসিড, পেপটাইডস, রেটিনয়েডস, ভিটামিন-সি ইত্যাদির সঙ্গে একই রুটিনে এই অ্যাসিড ব্যবহার করা যাবে না।

সাইট্রিক অ্যাসিড : এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ একটি অ্যাসিড, যা ত্বকের অকালে বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি এএইচএর তুলনায় কম অ্যাসিডিক। নায়াসিনামাইড, পেপটাইডস, ডিরেক্ট অ্যাসিড, রেটিনয়েডস ইত্যাদির সঙ্গে একত্রে এই অ্যাসিড ব্যবহার করা যায় না। রাতে ব্যবহার করাই উত্তম।

অ্যাজেলাইক অ্যাসিড : যাদের ত্বকে লালচে ভাব আছে, রোসেসিইয়া এবং ব্রণ রয়েছে, তারা ত্বকের সুস্থতার জন্য নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন এই অ্যাসিড। এটি আনইভেন স্কিনটোন ও মলিনতা দূর করতেও সাহায্য করে। এই অ্যাসিড রাতে ব্যবহার করা উত্তম।

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড : ব্ল্যাকহেডস এবং ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য অনন্য। পোরস মিনিমাইজ করতে সাহায্য করে। বয়সের ছাপ কমাতেও এর জুড়ি নেই। অ্যাসিড রাতে ব্যবহার করা উচিত।

ম্যান্ডেলিক অ্যাসিড : ম্যান্ডেলিক অ্যাসিড এমন একটি এএইচএ, যা ত্বকের মেলাসমা, হাইপার পিগমেন্টেশন, রিঙ্কেল (বলিরেখা), ব্রণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে খুব কার্যকর।

চুলের জন্য

ল্যাকটিক অ্যাসিড : মাথার ত্বকের শুষ্কতা, ফ্ল্যাকিনেস, খুশকি এবং এমনকি সিবামের জন্য এই অ্যাসিড উপকারী। মাথার স্ক্যাল্প শুষ্ক হলে চুলের ক্ষতি হয়। ল্যাকটিক অ্যাসিড মাথার ত্বকের মৃত কোষগুলোকে অপসারণ করে এবং প্রাকৃতিক চুল ঝরানোর প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করে এনজাইমের সংখ্যা কমায়। এছাড়া মাথার ত্বকে ফ্লেক্স থাকলে তা সবসময় খুশকি না; এমনকি মাথার ত্বকের সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বা সোরিয়াসিস হতে পারে। ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে থাকা প্রাকৃতিক তেলগুলোকে পুষ্টি জোগায় এবং মাথার ত্বক সুস্থ রাখে। এটি চুলের ফলিকলের চারপাশের মৃত ত্বক পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে।bs

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy