অল্প কাজ করলেই কি ক্লান্তি গ্রাস করে? বাইরে বেরোলে বাড়ি ফিরে আর কোনো কাজ করতে মন চায় না? মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন সহজেই? সামান্যতেই মনে হচ্ছে ঘুম পাচ্ছে? তাহলে হয়তো আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিনের অভাব অথবা পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা কমে গেছে। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবও এর কারণ হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে কিছু ঘরোয়া টোটকা আপনার হারিয়ে যাওয়া এনার্জি ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। তেমনই একটি সহজ সমাধান হলো এক গ্লাস দুধের সঙ্গে মিছরি মিশিয়ে খাওয়া। এই পানীয়টি আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করবে।
সুস্থতার জন্য দুধ একটি অত্যন্ত উপকারী পানীয়। এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। দুধে প্রোটিন, নিয়াসিন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, খনিজ পদার্থ, চর্বি, শক্তি, রাইবোফ্লাভিন, জিংক এবং ভিটামিন এ, ডি, কে ও ই এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিদ্যমান।
আপনার যদি দুধে অ্যাসিড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলেও এই আয়ুর্বেদিক টোটকাটি গ্রহণ করতে পারেন। কারণ দুধের সঙ্গে মিছরি অ্যান্টাসিড এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। শরীরের বাড়তি কর্মশক্তি যোগাতে দুধ অত্যন্ত উপযোগী। প্রাচীনকাল থেকেই মিছরি অনেক গুরুতর রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
দুধ-মিছরির কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা:
১. হালকা গরম দুধের সাথে মিছরি মিশিয়ে পান করলে বদহজমের সমস্যা দূর হয় এবং গ্যাস্ট্রিক ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
২. ঘুমের সমস্যায় ভুগলে, প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই পানীয়টি খান। এটি ঘুমের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে।
৩. এই পানীয় মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং মনকে শান্ত রাখতেও সাহায্য করে।
৪. যারা দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইলে কাজ করেন, তাদের জন্য দুধ-মিছরির মিশ্রণ বিশেষভাবে উপকারী। এটি চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৫. গরম দুধে সামান্য জাফরান ও মিছরি মিশিয়ে খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি আসে। এছাড়াও, এটি শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতেও সহায়ক।
৬. দুধ-মিছরির মিশ্রণ শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে আরও উন্নত করে, যার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
৭. ঠান্ডা আবহাওয়ায় এক গ্লাস গরম দুধ ও মিছরি পান করলে সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে দ্রুত রেহাই পাওয়া যায়।
সুতরাং, অল্প কাজেই ক্লান্ত লাগলে বা মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হলে, একবার দুধ-মিছরির এই ঘরোয়া টোটকাটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এটি আপনার শরীরে শক্তি যোগানোর পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানেও সহায়ক হতে পারে। তবে, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা অন্যান্য গুরুতর উপসর্গের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।