সুস্থ থাকতে সবুজ শাকসবজি ও ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। তবে ফলন বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে এই বিষ শরীরে প্রবেশ করলে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিও হতে পারে। তাই বাজার থেকে আনা ফল ও সবজি ভালোভাবে ধোয়া জরুরি। তবে কিছু ফল ও সবজিতে ধোয়ার পরেও কীটনাশক লেগে থাকার সম্ভাবনা থাকে। সেগুলো কী কী এবং কীভাবে কীটনাশকমুক্ত করবেন, তা জেনে নিন:
যেসব ফল ও সবজিতে কীটনাশক বেশি থাকে:
পালং শাক: বাজার থেকে কেনা বেশিরভাগ পালং শাকে পার্মাথ্রিন নামক এক ধরনের কীটনাশকের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি একটি নিউরোটক্সিন, যা মানুষ ও পশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। এই রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করলে ক্যানসার ও স্নায়ুর রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই পালং শাক খাওয়ার আগে লবণ-জলে ভিজিয়ে রেখে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
আঙুর ও আপেল: আঙুর ও আপেলের গায়ে প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক লেগে থাকে। অনেকেই না ধুয়েই এই ফল দুটি খেয়ে ফেলেন। এই দুটি ফলে ডাইফিনাইলঅ্যামাইন নামক ক্ষতিকর রাসায়নিকের খোঁজ পাওয়া গেছে। তাই ফল কিনে এনে প্রথমে জলে ভিজিয়ে রাখুন এবং পরে ভালো করে ধুয়ে খান।
পেয়ারা: পেয়ারা একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল, তবে ভালোভাবে না ধুয়ে খেলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। পেয়ারার গায়ে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই রাসায়নিক পেটে গেলে লিভারের জটিল রোগ হতে পারে।
কীভাবে ফল ও সবজি কীটনাশকমুক্ত করবেন?
বাজার থেকে কেনা রাসায়নিক মিশ্রিত দ্রবণে সবজি পরিষ্কার না করে, বাড়িতেই সহজ উপায়ে কীটনাশক দূর করা সম্ভব:
বেকিং সোডা ও জলের দ্রবণ: একটি পাত্রে জল নিয়ে তাতে পরিমাণমতো বেকিং সোডা মেশান। এই দ্রবণে ফল ও সবজি ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর তুলে নিয়ে পরিষ্কার জলে ভালো করে ধুয়ে নিন। এই পদ্ধতিতে প্রায় ৯০ শতাংশ কীটনাশক দূর করা সম্ভব।
জল ও ভিনেগারের দ্রবণ: সমপরিমাণ জল ও ভিনেগার মিশিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করুন। এতে এক চিমটি লবণ মেশান। কাঁচা সবজি, শাক ও ফল এই দ্রবণে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। তারপর দ্রবণ থেকে তুলে পরিষ্কার জলে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। সালাদ তৈরির আগে এই উপায়ে সবজি ধুয়ে নেওয়া বিশেষভাবে জরুরি।
এই সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে আপনি আপনার ফল ও সবজিকে কীটনাশকমুক্ত করতে পারেন এবং আপনার পরিবারকে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারেন। সুস্থ থাকতে হলে সচেতনতার সাথে খাবার পরিষ্কার করা অপরিহার্য।