জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধে বাড়তে পারে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি, সতর্ক করলেন গবেষকরা

জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ওষুধের একটি গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সম্প্রতি সতর্ক করেছেন গবেষকরা। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, বার্থ কন্ট্রোল পিল বা জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনের ফলে মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।

মার্কিন গবেষণার একটি নতুন রিপোর্টে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গবেষক দলটি ১,১০০ জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন। তাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, যারা অতীতে বা বর্তমানে বার্থ কন্ট্রোল পিল ব্যবহার করেছেন, তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি মহিলার স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বার্থ কন্ট্রোল পিল বা গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়া বন্ধ করার পরেও প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত স্তন ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে। তবে গবেষণায় এটিও প্রমাণিত হয়েছে যে, ইস্ট্রোজেন কম পরিমাণে সেবন করলে এই ক্ষেত্রে ক্যান্সারের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম থাকে।

আমেরিকার ‘ফ্রেড হোচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার’-এর গবেষকরা আরও জানতে পেরেছেন যে, মহিলারা যেহেতু বিভিন্ন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবন করেন অথবা বার্থ কন্ট্রোল পিলের ব্যবহার বেশি করেন, তাই তাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি থাকে। এই কারণে জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবনের মাত্রা এবং বিভিন্ন ধরনের গর্ভনিরোধক ফর্মুলেশন নিয়ে সতর্ক হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত ৪০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ইস্ট্রোজেনযুক্ত বার্থ কন্ট্রোল কম্বাইন্ড পিল সেবনের ফলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। মার্কিন গবেষকরা ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২১,৯৫২ জন মহিলার উপর টানা ১০ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে এই তথ্য পেয়েছেন। এই মহিলাদের মধ্যে ১,১০২ জন বিধি নিষেধ মেনে চলেছিলেন।

এই গবেষণা ফল মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার বার্তা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং ওষুধের মাত্রা ও ফর্মুলেশন সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত থাকা প্রয়োজন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy