অনাগত সন্তানের সুস্থতার জন্য একজন অন্তঃসত্ত্বা মায়ের শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকেই সুস্থ থাকা জরুরি। গর্ভকালীন সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্ষুধা লাগা এবং হরমোনের পরিবর্তনের কারণে স্বাদের ভিন্নতা আসা খুবই সাধারণ ঘটনা। এই সময় হরেক রকম খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগে।
তবে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সব ধরনের খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়। এই সময় খাদ্যতালিকায় অনেক বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। অনেকেরই ধারণা, গর্ভবতী অবস্থায় চিংড়ি মাছ খাওয়া ভালো নয়। কিন্তু আদৌ কি এই ধারণা সঠিক?
চিকিৎসকদের মতে, যদি কোনো হবু মায়ের চিংড়িতে অ্যালার্জির সমস্যা না থাকে, তাহলে তিনি নিশ্চিন্তে এই সুস্বাদু মাছটি খেতে পারেন। চিংড়ি খেলে কোনো ক্ষতি হয় না, বরং এটি হবু মা এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাতে অত্যন্ত উপকারী।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় চিংড়ি মাছ খেলে আরও যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়:
১. ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ: চিংড়ি মাছ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের একটি চমৎকার উৎস। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা প্রসব সংক্রান্ত ঝুঁকি কমাতে এবং গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক।
২. প্রোটিন ও ভিটামিনের উৎস: চিংড়ি মাছ থেকে হবু মায়েরা প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি পেতে পারেন। এই উপাদানগুলো মা ও শিশুর সঠিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩. আয়রন ও খনিজ পদার্থের ভান্ডার: চিংড়িতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম বিদ্যমান। এই খনিজ উপাদানগুলো হবু মা এবং তার সন্তানের শরীরে রক্তের মাত্রা বাড়াতে অপরিহার্য।
চিকিৎসকরা আরও জানান, যেসব সামুদ্রিক মাছে পারদের মাত্রা বেশি থাকে, সেগুলো অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিত। শার্ক এবং টুনা মাছের মতো কিছু মাছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পারদ থাকে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এই মাছগুলো না খাওয়াই ভালো। তবে চিংড়ি, স্যামন, তেলাপিয়া, মাগুর ও শিং মাছের মতো সামুদ্রিক ও মিঠা পানির মাছে পারদের মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। তাই হবু মায়েরা মাঝে মাঝে এই মাছগুলো তাদের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
সুতরাং, যদি আপনার চিংড়িতে অ্যালার্জি না থাকে, তাহলে গর্ভবতী অবস্থায় পরিমিত পরিমাণে চিংড়ি মাছ খাওয়া আপনার এবং আপনার অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে যেকোনো খাবার গ্রহণের পূর্বে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।